মাঈন উদ্দিন জাহেদ এর একগুচ্ছ কবিতা

রাতের আলপনা
রাতকে যাপন করি উল্লাসে ও আনন্দে 
রাতকে যাপন করি অসীম সম্ভাবনায়; 

এক একটি রাত আসে সুনসান নীরবতায়

এক একটি রাত যেন সুনিপুন সৃজনে-

কেটে যায় রচনা করে নিজস্ব আয়নায়

তোমার প্রিয়মুখ মুখচ্ছবি রঙানো;

তোমার সব কিছু সাজানো গোছানো-

রাতগুলো তাই নিসঙ্গ তরপায় বেদনায় ।

ঝিঁ ঝিঁ পোকারা আমাকে চেনে 

চেনে মেয়ে মৌ মাছি আর কাটপোকা;

ওদের চিৎকারে আমার ধ্যান ভাঙ্গে 

নিত্যদিন টিকটিটির সঙ্গমে ভেবাচেকা।

বায়স ফিঙ্গে আমাকে চেনে , 

চেনে খুনসুটিতে ব্যস্ত যমজ গুই সাপও ; 

প্রতিদিন ভুল করে ঢুকে আমার বেড রুমে 

ওর কী সাধ জাগে আমাদের রঙ্গম দেখা ? 

রাতগুলো তাই নিরালা নিরালা – 

 জাগি আমি, তুমি ঘুমো- এতো কবিতা চাকা।

১১.০৮.২০১৫
  

হৃদয়পুর
রিদয়পুরের সাহিত্য আড্ডা 
ব্যানারে লেখা আছে – ২৮-২৯ আগস্ট-২০১৪

কী অদ্ভুত শুরুতে লেখা – প্রতিপক্ষ!

এমন ধবল করে কেউ বিনয়ী বিরোধী হয়?

নিজ থেকে জানিয়ে দেয়া- আমি তোমার প্রতিপক্ষ।

ফরহাদ ভাই কী যেন বুঝাচ্ছেন- একটি ছবিতে,

মুচকি হাসি রাফানের – অন্য ছবিতে।

গৌতম দা মনে হয় ব্রিক নিয়ে ব্যস্ত- আঙ্গুল তোলা আছে;

বিশ্বব্যাংক না চয়না ব্যাংক- যতসব অর্থ অনর্থ;

এই ফাঁকে কেউ কেউ চা তে চুমুক ।

আমি প্রবল ভাবে দেখে আছি ঝুটি , 

ফরহাদ ভাই কীভাবে রেখেছে বেঁধে এতোটা সময়?

কী সমাজ ভাঙ্গবো আমি ? শুধু বিয়ের কারনে-

বিসর্জন দিলাম পরম চুলগলো নরসুন্দরের কাছে।

ফেইস বুকে ছবিগুলো দেখে দেখে হঠাৎ

আটকে গেলো চোখ, দুটো চোখ কী গভীর গভীর,

যেন ঠিকরে পড়ছে পরম প্রতিভা-

এমন ঝলসানো আলো দেখিনি আর,

চোখ তার মেধার ঝলসানো আলো, চুল তার বনলতা সেন-

ফরহাদ ভাইয়ের প্রতিপক্ষ হয়ে কী চরম বিষন্নতায়

তাকিয়ে আছে আমার ক্যামেরা চোখে;

রাফান! এ ভরা জলসায় তুমি কী মান্যবর গালিব?

০৩.০৮.২০১৫
অধরা মাধুরী
কোথায় দেখেছি প্রথম তোকে-

সেই লেংটো বেলায় জামা ফ্রক তিড়িং বিড়িং,

বেলা যায় বেলা বাড়ে , মহাকাল করে যায় হীম; 

সে গভীর গহীন থেকে উঠে আসে ফড়িং ফড়িং।

মোটা ভ্রূ বেটপ চোখ গরুকে হার মানা –

তোকে খোঁচাতে আমার , কী গভীর হওয়া আনমনা!

নিত্য খুনশুটি – রিমোটের বাটন চেইঞ্জ-

এ নিয়ে হূলুস্তুল দাপাদাপি আমি আর তুই;

ফাগুনের বইমেলা, বৈশাখের মেলা যাইরে…

হাহ হা কী যাপন ! যদ্দুর তোকে পাইরে…

তবুও অধরা তবুও মাধুরী তবুও আমারই দীক্ষিত

তোকে পাওয়ার লোভে রচিত সব প্রেক্ষিত ।

অধরা মাধুরী তুই- অধরাই সই-

নিত্য তিড়িং তিড়িং, আসা জীবন ফড়িং।
০২.০৮.২০১৫

  
পর্যটন
তুমি তো জানালায় না চিহ্ন এঁটে দিয়েছো-
অনেক দিন তোমার কোনো তথ্য জানিনা।

ইথারে যখন ভেসে আসতো এক একটি ছবি কিংবা গান

কি উজাড় করে দেখেছি সে সব, শুনেছি সে মায়ামন্ত্র মন্ত্রণা।

অথচ তোমার সুনসান গোছানো সংসারে , যেনো না হয় ছন্দ পতন,

বিড়ালের পা ফেলে নীরবে দূরে থাকি , না দিয়ে তোমাকে যন্ত্রণা ।  

হাওয়ায় হাসি খেলি , হাওয়ায় ভাসায় মুগ্ধতার ভেলা নৌকা 

কীভাবে টের পেলে আমার এ ইথার পযর্টন টোকা ।

তোমার কী জেগেছে কোনো ভুতুরে জ্ঞান ?

না কী তুমিও জেগো আছো প্রানহীন প্রান?

অথচ কাল রাত সারা রাত জেগেছি আমি,

বাম পাশে শুয়ে ছিলে মায়াহীনা তুমি।

২৫.০৭.২০১৫

ভুলা না ভুলা
মাথায় বিলি কাটতে কাটতে বলে ফেললে-
বিয়েটা শেষ পযর্ন্ত করেই ফেললে ।

অথচ তোমার একটি মাত্র হ্যা শব্দ শোনার জন্য 

আমি কতবার হাই লেবেল রোড ধরে হেঁটে গেছি,

প্রিয় এ্যালপার লেপের চকলেট কিনতে গেলে 

দোকানি বুঝে যেতো আমার মুগ্ধতা-

তোমার না , চকলেটের সে দ্বিধা আজও আমার আছে;

অথচ বাড়তি চকলেটগুলো আজও আমি রেখে দি

তুমি আজও আমার চুলে বিলি কাটছো কাটছো 

চৌদ্দোটা বছর চলে গেলো আমরা স্মৃতিতে হারায় 

প্রিয় প্রসঙ্গ এলে ভুলে যায় দীপান্তরের দূরত্বের কথা –

এইতো মনে হয় তুমি বলছো –

বিয়েটা করেই ফেললে?

অথচ তুমিতো জানো আমি ভনিতা জানিনা,

প্রস্তাবটা দিয়ে নির্দ্বিধায় বলে ফেললাম- 

তুমি নাও বলতে পারো , আমি নির্বিগ্নে ভুলে যাবো।

জীবনে এই একবার মিথ্যা বলেছিলাম-

কই তোমাকে ভুলার কষ্ট আজো আমাকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

৩০ মে ২০১৫

  

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান